শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৬:১৫ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প: অর্ধেক কাজ শেষে ভুল ধরার চেষ্টা

চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প: অর্ধেক কাজ শেষে ভুল ধরার চেষ্টা

স্বদেশ ডেস্ক:

চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে ২০১৭ সালে নেওয়া প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যে ৫৫ ভাগ শেষ হয়েছে। এ অবস্থায় প্রকল্পের নকশায় ও কাজে কোনো ধরনের ত্রুটি আছে কিনা, তা খুঁজে বের করতে গতকাল শনিবার একটি কমিটি গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। এ কটিমির প্রধান করা হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারকে।

চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস মিলনায়তনে আয়োজিত ‘চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন, কর্ণফুলী নদীর নাব্যতা বৃদ্ধি, দখল ও দূষণ রোধে গৃহীত কার্যক্রম পর্যালোচনা’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভা শেষে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। সভায় চট্টগ্রামের মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব হেলালুদ্দিন আহমদসহ স্থানীয় পর্যায়ে সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম পরিদর্শন করতে গত দুদিন চট্টগ্রামে আছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। গত শুক্রবার বিকালে কর্নফুলী নদীর সংযোগস্থলে নির্মাণাধীন চাক্তাই খালের স্লুইসগেট দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করেন মন্ত্রী। জানতে চান চাক্তাই খালের মুখের প্রশস্ততা এত কমানো হয়েছে কেন।

গতকালের সভাশেষে মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসনসহ একটি সুন্দর নগরী বিনির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছেন এবং সেগুলো বাস্তবায়ন হচ্ছে। এই কাজগুলো বাস্তবায়নকালীন সময়ে কোথাও কোনো ত্রুটি চিহ্নিত হলে সেটার সমাধানের জন্য বিভাগীয় কমিশনারের নেতৃত্বে একটি কমিটি হয়েছে। কমিটিতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র এবং জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে উপদেষ্টা হিসেবে রাখা হয়েছে। জেলা প্রশাসকও থাকবেন।

২০১৭ সালের আগস্ট মাসে ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) একটি প্রকল্প অনুমোদন দেয় একনেক। সিডিএর ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকার এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড। ২০১৭ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদকাল ধরা হয়। ২০১৮ সালের ২৮ এপ্রিল থেকে খালের আবর্জনা অপসারণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় প্রকল্পের কার্যক্রম। ইতোমধ্যে নগরের ৩৫টি খাল থেকে ৩ হাজার ১৭৯টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় ৫৪টি ব্রিজ-কালভার্টের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে।

নির্ধারিত সময়ে কাজ শুরু ও শেষ করতে না পারায় প্রকল্পের মেয়াদ এক বছর বাড়িয়ে চলতি বছর জুন পর্যন্ত করা হয়েছিল। এরপর এখন আরও দুই বছর বাড়িয়ে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ করার আলোচনা চলছে।

এই মেগা প্রকল্প গ্রহণের আগে নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনের দায়িত্ব ছিল চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক)। কিন্তু প্রকল্পটি চালুর পর জলাবদ্ধতা হলেই মেয়র সরাসরি এ জন্য সিডিএকে দায়ী করছেন।

জলাবদ্ধতা নিয়ে গতকাল মন্ত্রী তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘গত শুক্রবার আমি পরিদর্শন করেছিলাম। ওনারা যেভাবে ডিজাইন করেছেন, সেই ডিজাইনগুলোয় কোনো ত্রুটি আছে কিনা, সেটা যাচাই করা হবে। বিভাগীয় কমিশনারের নেতৃত্বে যে কমিটি হয়েছে তারা সব কাগজপত্র দেখে কোনো ত্রুটি পাওয়া গেলে আমাদের অবহিত করবে।’

জানতে চাইলে সেনাবাহিনীর নিযুক্ত প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল শাহ আলী বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের ৫৫ ভাগ কাজ আমরা ইতোমধ্যে শেষ করেছি। প্রকল্পের সার্বিক ডিজাইনে কোনো সমস্যা নেই বা সেটা পরিবর্তনের কোনো বিষয় নেই। মন্ত্রী মহোদয় রেগুলেটরগুলো দেখে যেটা বলেছেন, সেটা হচ্ছে সেগুলো আরও বড় হলে ভালো হতো। কিন্তু এগুলো তো ড্রইং-ডিজাইন দেখেই হয়েছে। সেটা নিয়ে আমরা যারা ডিজাইন করেছেন, তাদের সাথে একটু বসব। তারা ডিজাইন দেখে জানাবেন যে কোনো ত্রুটি আছে কিনা। শুধু এতটুকুই সিদ্ধান্ত সভায় হয়েছে।

তবে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেছেন, প্রকল্পের কাজ শেষ হলে কোনো ত্রুটি ছিল কিনা সেটা ধরা পড়বে। কিন্তু কাজ চলাকালীন সময়েই মনিটরিং করা হচ্ছে, যদি কোনো ত্রুটি ধরা পড়ে, সেটা সংশোধন করা হবে। মন্ত্রী বলেন, আজকের (শনিবার) সভার পর চসিক এবং সিডিএর মধ্যে আর কোনো সমন্বয়হীনতা থাকবে না বলেও আশা করেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী।

এর আগে মন্ত্রী শাহ আমানত বিমানবন্দর থেকে কর্ণফুলী সেতু পর্যন্ত নদীর দুই পাড়ে স্থাপনা নির্মাণের জন্য কোনো জায়গা ইজারা না দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877